রাউজানের সর্তা খালের তলদেশ এখন বালুতে মরুভুমি পানির জন্য কৃষকজীবিদের হাহাকার

মীর আসলাম.

রাউজানের উত্তরাংশের ফটিকছড়ির সীমানা বিভক্তকারী সর্তার খালের পানির উপর নির্ভরশীল দুপাড়ের কয়েক হাজার কৃষকের চাষাবাদ। এই খালটিতে এখন শুকিয়ে বালুর মরুভুমিতে পরিণত হয়ে যাওয়ায় কৃষককুলে চলছে পানি জন্য হাহাকার। খালের রাউজান অংশের হচ্চারঘাট এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায় কয়েক কিলোমিটার দৃষ্টিসীমার মধ্যে খালটির তলদেশ মরুময়। দুপাড়ের কৃষকরা ফসলী জমি, ক্ষেত খামারে পানির জন্য খালের তলদেশে স্যালো পাম্প বসিয়ে রাখলেও পাচ্ছে না পানি। খালপাড়ের চাষাবাদ করে যারা জীবন নির্বাহ করেন তারা বলেছেন খালের পানিতেই তাদের জীবন জীবিকা। রাউজান ফটিকছড়ির কয়েক হাজার কৃষক দুপাড়ে চাষাবাদ করে রুটি রোজির যোগান দিতে হয়। শীত মৌসুমে দুপাড়ে কৃষকদের উৎপাদিত সবজি চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে। কয়েকশ একর জমিতে চাষাবাদ হয় ব্যোরো ধান। এবার শীত মৌসুমে যারা চাষাবাদ করেছে পানি অভাবে তাদের জমি শুকিয়ে মরতে শুরু করেছে।

 

খবর নিয়ে জানা যায়, এই খালের উৎপত্তিস্থল পার্ব্বত্য জেলার দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চল থেকে। খালটি রাউজানের হলদিয়া, নোয়াজিশপুর, গহিরা, ফটিকছড়ির নানুপুর, খিরাম, বক্তপুর, ধর্মপুর,আবদুল্লাহপুর হয়ে রাউজানের গহিরায় এসে হালদা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেছেন প্রচীণকাল থেকে এই খালের মাধ্যমে পাহাড়ী অঞ্চল থেকে ঝিরঝির ধারায় পানি নেমে আসতো নিচের দিকে। এই পানিতে কৃষকরা হাজার হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করতো। গত কয়েক বছর থেকে খালটির পূর্বাংশের (পার্ব্বত্য জেলা) নিবিচারের পাহাড় কাটা ও পাহাড়ের ধসে খালটির তলদেশ বালুতে ভরাট হয়ে গেছে। একারণে নিচের দিকে পানি নেমে আসতে পাচ্ছে না। তিনি মনে করেন কৃষকদের জীবনধারা সচল রাখতে খালের তলদেশ থেকে বালু উঠিয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা না গেলে অদুর ভবিষৎতে দুই পাড়ের হাজার হাজার কৃষক তাদের জমি অনাবাদি রেখে দেবে।

 

নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরোয়ার্দ্দি সিকদার বলেছেন তার ইউনিয়নের উপরদিয়ে বয়ে যাওয়া সর্তা খালের বিশাল অংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মৌমুমে পানি অভাবে মানুষ চাষাবাদ করতে পারছেন না। আবার বর্ষার সময় এই খাল হয়ে তীব্র স্রোতে পাহাড়ী পানি নামতে গিয়ে দুপাড়র ভাংছে। তিনি জানান এই পরিস্থিতিতে রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে ভরাট হয়ে খালের অংশ পরিষ্কার করা হচ্ছে, ভাঙ্গনরোধে বাঁক কেটে পানি প্রবাহ নিরাপদ করে দেয়া হচ্ছে।
খালের উপড়িয়াংশের কৃষকরা জানিয়েছে ফটিকছড়ির কতিপয় প্রভাবশালী উপড়ের দিকে বিভিন্নস্থানে বাঁধ দিয়ে কৃষিকাজের পানির সুবিধা নিচ্ছে। অথচ নিচের দিকে থাকা কৃষকরা পানি পাচ্ছে না। এই অবস্থা থেকে কৃষিজীবিদের বাঁচাতে উপড়িয়াংশে বাঁধ কেটে দেয়ার পাশাপাশি তলদেশ থেকে বালু উঠিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়েছে এ অঞ্চলের কৃষিজীবিরা।

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on email
Email

সম্পর্কিত