
চট্টল সময় ডেক্স ঃ
রাউজান সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. সাব্বির উদ্দিন (১৭)। প্রতিদিনের মত গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল রাউজানের জলিল নগর থেকে সিএনজি টেক্সিতে করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সামনে নেমেছিল রাঙ্গামাটি সড়ক পাড় হচ্ছিল কলেজ ক্যাম্পাসের উদেশ্যে। সড়ক পার হতে গিয়ে পিছন থেকে আসা একটি বাস তাকে ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হয়ে সড়কে লুটে পড়ে। স্থানীয় তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গুরুতর অবস্থায় সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরের একটি বড় হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে গেলে বাঁচানো যায়নি সাব্বিরকে। যেখানে এই দুঘটনা ঘটে সেই জায়গাটি রাঙ্গামাটি-রাউজান চার লেইন সড়ক পথে গহিরা কুন্ডেশ্বরী এলাকা।
সড়ক বিপরীতে আছে রাউজান সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। নিহত শিক্ষার্থী সাব্বির রাউজান উপজেলার রাউজান সদর ইউনিয়নের জারুলতলা গ্রামের মো. নাজিম উদ্দিনের তৃতীয় পুত্র।
এই দুর্ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে। সাব্বিরের শোকাহত বাবা নাজিম উদ্দিন ছেলের মৃত্যুতে বিলাপ করতে করতে জানান সকালে প্রতিদিনের মত বাড়ি থেকে বাপ-বেটা ঘর থেকে এক সাথে বের হয়েছিলেন। জলিলনগর এসে ছেলেকে কলেজের উদেশ্যে সিএনজিতে উঠিয়ে দিয়েছিলেন। এদিন যে ছেলের শেষ কলেজ যাত্রা হবে আমি জানতাম না। আর কোনো দিন আমার সাব্বিরকে সাথে নিয়ে আর বাড়িতে আসাযাওয়া হবে না।
জানা যায় দুর্ঘটনার সংবাদ শুনে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় এসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা গাড়ির চালককে দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানায়। এসময় সড়কের উভয় দিকে প্রায় আড়াইটা পর্যন্ত সড়ক পথে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। শিক্ষার্থীরা এই দুরুত্বস্থানে জেব্রাক্রসিন না থাকায় কলেজের সামনে বার বার দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের সড়ক পথ ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। পরে তারা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পালিয়ে যাওয়া ঘাতক বাসচালককে গ্রেফতার করাসহ কলেজের সামনের রাস্তায় পাড়াপারের ফুটওভার ব্রিজ অথবা জেব্রাক্রসিং করার দাবি জানান। তা না হলে শিক্ষার্থীরা কঠোর অন্দোলনে যাওয়ার হুসিয়ারী দিয়ে সড়ক পথ ছাড়েন। সন্ধ্যায় নিহত শিক্ষার্থীর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে আনা হলে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়
রাউজান হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) সিরাজুল ইসলাম ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। বাসটি আটক হলেও চালক পালিয়েছে। শোকাহত শিক্ষার্থীরা এসময় প্রতিবাদী হয়ে সড়ক পথ অবরোধ করে, পরে শিক্ষার্থীদের দাবি শুনেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপস্থিত সদস্যরা। তারা শিক্ষার্থীদের সাথে দাবি পূরণের আশ্বাস প্রদান করলে সড়কের অবরোধ তুলে নেয়।